নতুন ল্যাপটপ ক্রয়ের গাইডলাইন - ভাল ট্যাপটপ চেনার উপায়?

নতুন ল্যাপটপ গাইড, প্রযুক্তির জগতে প্রবেশের জন্য একটি সঠিক নতুন ল্যাপটপ নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নতুন ল্যাপটপ গাইডে, আমরা আপনাকে দেখাবো কীভাবে একটি উপযুক্ত ডিভাইস নির্বাচন করবেন? যা আপনার ব্যক্তিগত এবং পেশাদার প্রয়োজন মেটাতে সহায়ক হবে।
নতুন ল্যাপটপ ক্রয়ের গাইডলাইন - ভাল ট্যাপটপ চেনার উপায়?

একটি প্রিমিয়াম ল্যাপটপ কেনার সময় কেমন বৈশিষ্ট্য খোঁজেন এবং কেন এই গাইডটি আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন এবং আপনার নতুন ল্যাপটপ নির্বাচন সহজ করে তুলুন।

নতুন ল্যাপটপ গাইড?

নতুন ল্যাপটপ গাইড সম্পর্কে জানুন? নতুন ল্যাপটপ কেনার সময় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় রাখতে হয়। প্রথমেই আপনার প্রয়োজন বুঝে নেয়া উচিত এটি কি কাজের জন্য, গেমিংয়ের জন্য, নাকি সাধারণ ব্যবহারের জন্য। প্রয়োজন অনুযায়ী, একটি শক্তিশালী প্রসেসর, পর্যাপ্ত র‍্যাম, এবং দ্রুত স্টোরেজ নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান বাজারে Intel Core i5 ও AMD Ryzen 5 প্রসেসর বেশ জনপ্রিয়, কারণ এরা ভালো পারফরম্যান্স দেয় এবং দামেও সাশ্রয়ী।

স্পেসিফিকেশন বাছাইয়ের সময় RAM-এর পরিমাণ এবং স্টোরেজ টাইপ গুরুত্বপূর্ণ। 8GB RAM আজকাল মৌলিক চাহিদার জন্য আদর্শ? কিন্তু আরো ভারী অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের জন্য 16GB RAM উপযুক্ত। স্টোরেজ হিসেবে SSD (Solid State Drive) দ্রুত তথ্য প্রক্রিয়াকরণ নিশ্চিত করে, যেখানে HDD (Hard Disk Drive) তুলনামূলকভাবে ধীর।

বাজেটের কথা চিন্তা করলে, আপনি কোন রেঞ্জের মধ্যে ল্যাপটপ খুঁজছেন তা নির্ধারণ করুন। বাজেটের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সেরা স্পেসিফিকেশন নিশ্চিত করতে? বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ তুলনা করে দেখুন।

ব্যাটারি লাইফও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়, বিশেষ করে যদি আপনি মুভমেন্টে থাকেন। এছাড়া, ল্যাপটপের পোর্টেবিলিটি, স্ক্রীনের আকার ও রেজুলেশন, এবং বিল্ড কোয়ালিটি বিবেচনায় নেয়া উচিত। নতুন ল্যাপটপ গাইডে এই সমস্ত বিষয় নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

সবচেয়ে ভালো ল্যাপটপ?

সবচেয়ে ভালো ল‍্যাপটপ সম্পর্কে জানুন। আজকাল বাজারে বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ড এবং মডেল রয়েছে যেগুলি বিভিন্ন প্রকারের ব্যবহারকারীর জন্য উপযুক্ত। সেরা ল্যাপটপ নির্বাচন করার সময়, কিছু মডেল বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
  • Apple MacBook Air M2: একে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে ভালো ল্যাপটপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি অত্যন্ত পাতলা ও হালকা, কিন্তু তার সাথেই মজবুত পারফরম্যান্স প্রদান করে। M2 চিপের কারণে এটির গতি ও দক্ষতা অসাধারণ।
  • Dell XPS 13: এটি একটি শক্তিশালী উইন্ডোজ ল্যাপটপ যা প্রিমিয়াম বিল্ড কোয়ালিটি এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি লাইফ প্রদান করে। এই মডেলটি উচ্চ মানের ডিসপ্লে এবং শক্তিশালী পারফরম্যান্সের জন্য পরিচিত।
  • Lenovo ThinkPad X1 Carbon: এই ল্যাপটপটি ব্যবসায়িক ব্যবহারের জন্য আদর্শ। এর শক্তিশালী বিল্ড এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি লাইফ, পাশাপাশি উন্নত কীবোর্ড ব্যবহারের জন্য এটি প্রশংসিত।
  • HP Spectre x360: এটি একটি 2-ইন-1 ল্যাপটপ, যা পোর্টেবল এবং শক্তিশালী পারফরম্যান্স প্রদান করে। এর ফ্লেক্সিবল ডিজাইন এবং স্পষ্ট ডিসপ্লে ব্যবহারকারীদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে।
এই ল্যাপটপগুলো তাদের নির্ভরযোগ্যতা, পারফরম্যান্স এবং ব্যবহারকারী অভিজ্ঞতার জন্য প্রশংসিত, এবং আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোন মডেল নির্বাচন করতে পারেন।

সেরা ল্যাপটপ কোনটি?

সেরা ল‍্যাপটপ সম্পর্কে জানুন। সেরা ল্যাপটপ শব্দটি বাজারের চাহিদা ও ব্যবহারকারীর চাহিদার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। বর্তমান বাজারে বিভিন্ন প্রকারের ল্যাপটপ উপলব্ধ যা বিভিন্ন প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম।
  • Apple MacBook Pro 16-inch: গেমিং, ভিডিও এডিটিং, এবং পেশাদার কাজের জন্য এটি একদম উপযুক্ত। M2 Pro বা M2 Max চিপের কারণে এটি অসাধারণ পারফরম্যান্স প্রদান করে।
  • Asus ROG Zephyrus G14: গেমারদের জন্য এটি একটি উৎকৃষ্ট পছন্দ। এর শক্তিশালী AMD Ryzen 9 প্রসেসর এবং NVIDIA GeForce RTX 4060 গ্রাফিক্স কার্ডের কারণে গেমিং অভিজ্ঞতা চমৎকার হয়।
  • Microsoft Surface Laptop 5: এটি একটি স্লিম এবং স্টাইলিশ ল্যাপটপ যা উচ্চ মানের ডিসপ্লে ও মসৃণ পারফরম্যান্স প্রদান করে। এটি অফিসের কাজে কিংবা দৈনন্দিন ব্যবহারে আদর্শ।
  • Acer Swift 3: একটি সাশ্রয়ী বাজেটের ল্যাপটপ যা ভালো পারফরম্যান্স প্রদান করে। এর Intel Core i5 প্রসেসর ও 8GB RAM এর কারণে এটি অধিকাংশ মৌলিক কাজের জন্য উপযুক্ত।
এই ল্যাপটপগুলো তাদের বৈশিষ্ট্য, পারফরম্যান্স এবং ব্যবহারকারীর পর্যালোচনার ভিত্তিতে সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী একটি উপযুক্ত ল্যাপটপ নির্বাচন করতে এই তালিকা সহায়ক হতে পারে।

বিভিন্ন ধরনের ল্যাপটপ ২০২৪?

২০২৪ সালের ল্যাপটপ বাজারে বিভিন্ন ধরনের ল্যাপটপ পাওয়া যাচ্ছে যা বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারকারীর প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম।
  • উইন্ডোজ ল্যাপটপ: এর মধ্যে Dell XPS, HP Spectre, এবং Lenovo ThinkPad অন্তর্ভুক্ত, যা শক্তিশালী পারফরম্যান্স এবং ব্যবসায়িক ব্যবহারের জন্য আদর্শ।
  • ম্যাকবুক: Apple MacBook Air ও MacBook Pro এর মধ্যে বিভক্ত। MacBook Air পাতলা ও লাইটওয়েট, যেখানে MacBook Pro উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এবং প্রফেশনাল কাজের জন্য উপযুক্ত।
  • গেমিং ল্যাপটপ: Asus ROG, MSI, এবং Acer Predator এই ক্যাটাগরিতে পড়ে। এগুলি শক্তিশালী গ্রাফিক্স এবং প্রসেসর সহ আসে, যা গেমিং অভিজ্ঞতাকে উন্নত করে।
  • 2-ইন-1 ল্যাপটপ: HP Spectre x360 এবং Lenovo Yoga এই বিভাগে পড়ে। এই ল্যাপটপগুলো ট্যাবলেট হিসেবে ব্যবহারযোগ্য এবং ল্যাপটপের সাথে ফ্লেক্সিবল ডিজাইন অফার করে।
  • প্রধান stream ল্যাপটপ: Acer Swift 3 এবং ASUS VivoBook সাধারণ ব্যবহারের জন্য ভাল বিকল্প, যা সহজে পোর্টেবল এবং প্রতিদিনের কাজের জন্য উপযুক্ত।
  • প্রতিটি ল্যাপটপ টাইপের বিভিন্ন মডেল বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে আসে, এবং আপনার চাহিদার ভিত্তিতে সঠিক মডেল নির্বাচন করতে সাহায্য করে।

বিভিন্ন ল্যাপটপের পারফরম্যান্স?

বিভিন্ন ল্যাপটপের পারফরম্যান্স নির্ভর করে এর প্রধান উপাদানগুলির ওপর—প্রসেসর, RAM, স্টোরেজ এবং গ্রাফিক্স।
  • প্রসেসর: Intel Core i7 ও AMD Ryzen 7 এর মতো প্রসেসরগুলো উচ্চ পারফরম্যান্স প্রদান করে। এগুলো দ্রুত তথ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং মাল্টিটাস্কিং সক্ষম।
  • RAM: 8GB RAM সাধারণ ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট হলেও, 16GB বা তার বেশি RAM ভারী অ্যাপ্লিকেশন চলানোর জন্য প্রয়োজন।
  • স্টোরেজ: SSD (Solid State Drive) হারে ডাটা অ্যাক্সেসের গতি বেশি, যেখানে HDD (Hard Disk Drive) তুলনামূলকভাবে ধীর। SSD ল্যাপটপগুলো দ্রুত বুট টাইম এবং অ্যাপ্লিকেশন লোডিং প্রদান করে।
  • গ্রাফিক্স: NVIDIA GeForce RTX ও AMD Radeon গ্রাফিক্স কার্ড গেমিং এবং গ্রাফিক্স-ইনটেনসিভ কাজের জন্য আদর্শ।
  • ব্যাটারি লাইফ: ব্যাটারি লাইফ নির্ভর করে ল্যাপটপের ব্যবহার এবং ডিসপ্লে ব্রাইটনেসের উপর। উচ্চ পারফরম্যান্স ল্যাপটপগুলো সাধারণত দ্রুত ব্যাটারি ফুরিয়ে যেতে পারে, তাই দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি নির্বাচন করা উচিত।
এই সমস্ত ফ্যাক্টর ল্যাপটপের সামগ্রিক পারফরম্যান্স নির্ধারণ করে এবং আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত মডেল নির্বাচন করতে সাহায্য করে। নতুন ল্যাপটপ গাইড সম্পর্কে আরও জানুন।

সেরা ল্যাপটপ প্রযুক্তি কোনগুলো?

বর্তমান সময়ে ল্যাপটপ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কিছু বিশেষত্ব রয়েছে যা পারফরম্যান্স উন্নত করতে সহায়তা করে। প্রথমত, M1/M2 চিপ প্রযুক্তি, যা Apple MacBook-এ ব্যবহৃত হয়, পারফরম্যান্স ও ব্যাটারি লাইফের দিক থেকে অত্যন্ত উন্নত। এই চিপগুলি কম শক্তি ব্যবহার করে বেশি ক্ষমতা প্রদান করে।
  • আরেকটি উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তি হলো SSD স্টোরেজ। SSD (Solid State Drive) HDD (Hard Disk Drive)-এর তুলনায় অনেক দ্রুত ডাটা অ্যাক্সেস করে, যা ল্যাপটপের সামগ্রিক গতি বৃদ্ধি করে।
  • হাই রেজল্যুশন ডিসপ্লে ও টাচস্ক্রিন প্রযুক্তি এখনকার ল্যাপটপগুলিতে সাধারণ হয়ে উঠেছে। উচ্চ রেজল্যুশন ডিসপ্লে ফটো ও ভিডিওর বিস্তারিত উপস্থাপন নিশ্চিত করে, এবং টাচস্ক্রিন সুবিধা ব্যবহারকারীকে আরও ইন্টারঅ্যাক্টিভ অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
  • সবশেষে, নতুন জেনারেশনের প্রসেসর যেমন Intel Core i7 ও AMD Ryzen 7 ল্যাপটপের পারফরম্যান্স উন্নত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এগুলি মাল্টিটাস্কিং ও ভারী অ্যাপ্লিকেশনের জন্য আদর্শ।
আপনি যদি নতুন ল্যাপটপ কিনতে আগ্রহী হন, তাহলে এই প্রযুক্তিগুলির সুবিধা সম্পর্কে জানতে সহায়ক হবে। সেরা ল‍্যাপটপ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানলাম।

নতুন ল্যাপটপ কেনার জন্য প্রাথমিক ধাপ?

নতুন ল্যাপটপ কেনার আগে কিছু প্রাথমিক ধাপ অনুসরণ করা জরুরি। প্রথমেই, আপনাকে বুঝতে হবে ল্যাপটপটি কীভাবে ব্যবহৃত হবে বিক্রয় কাজ, গেমিং, নাকি সাধারণ ব্যবহারের জন্য।
  • এরপর, আপনার বাজেট নির্ধারণ করুন। বাজেট অনুযায়ী ল্যাপটপের স্পেসিফিকেশন ও ব্র্যান্ড নির্বাচন করা সহজ হবে।
  • বাজারে বিভিন্ন মডেল ও ব্র্যান্ড রয়েছে, তাই পর্যালোচনা ও ব্যবহারকারীর মতামত পর্যালোচনা করা দরকার।
  • অবশেষে, ল্যাপটপের পারফরম্যান্স, বিল্ড কোয়ালিটি এবং গ্রাহক সেবা সম্পর্কে নিশ্চিত হন। এই ধাপগুলি অনুসরণ করলে আপনার জন্য সঠিক ল্যাপটপ নির্বাচন করা সহজ হবে।
  • আপনার নতুন ল্যাপটপ কেনার পরিকল্পনায় এই প্রাথমিক ধাপগুলো নিশ্চয়ই সহায়ক হবে।

ল্যাপটপের স্পেসিফিকেশন বাছাই করার নির্দেশিকা?

ল্যাপটপের স্পেসিফিকেশন বাছাই করার নির্দেশিকা?

ল্যাপটপ কেনার সময় স্পেসিফিকেশন বাছাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, প্রসেসর নির্বাচনের সময়, Intel Core i5 বা AMD Ryzen 5 সাধারণ ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট। তবে, উন্নত পারফরম্যান্সের জন্য Core i7 বা Ryzen 7 বেছে নিতে পারেন।
  • RAM পরিমাণও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 8GB RAM আজকাল মৌলিক চাহিদার জন্য আদর্শ, তবে 16GB বা তার বেশি RAM ভারী কাজের জন্য উপযুক্ত।
  • স্টোরেজ হিসেবে SSD (Solid State Drive) দ্রুত তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করে, যেখানে HDD (Hard Disk Drive) তুলনামূলকভাবে ধীর।
  • গ্রাফিক্স কার্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যদি আপনি গেমিং বা গ্রাফিক্স-ইনটেনসিভ কাজ করেন। NVIDIA GeForce বা AMD Radeon গ্রাফিক্স কার্ডের মাধ্যমে ভালো পারফরম্যান্স নিশ্চিত করা যায়।
  • এই নির্দেশিকাগুলো অনুসরণ করে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক স্পেসিফিকেশন নির্বাচন করতে পারেন।

সেরা ব্র্যান্ড ও মডেল নির্বাচন কিভাবে করবেন?

সেরা ব্র্যান্ড ও মডেল নির্বাচন করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় রাখা উচিত। প্রথমত, ব্র্যান্ডের নাম ও গ্রাহক পর্যালোচনা যাচাই করা উচিত। ব্র্যান্ডের ওপর নির্ভরযোগ্যতা ও গ্রাহক সেবা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।
  • ব্র্যান্ডের জনপ্রিয়তা যেমন Apple, Dell, Lenovo, ও HP বাজারে পরিচিত। এগুলোর মডেল সাধারণত ভালো পারফরম্যান্স এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়।
  • মডেলের বৈশিষ্ট্য ও মূল্য তুলনা করে দেখুন। প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের মডেল যেমন MacBook Pro বা Dell XPS উচ্চ পারফরম্যান্স প্রদান করে, তবে সাশ্রয়ী মডেলগুলিও ভালো হতে পারে।
  • অপর্যাপ্ত পারফরম্যান্স বা ব্যাটারি লাইফ সমস্যা হতে পারে এমন মডেল থেকে বিরত থাকুন। সঠিক ব্র্যান্ড ও মডেল নির্বাচন করলে আপনার ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত হবে।

বাজেট অনুযায়ী ল্যাপটপ নির্বাচন?

বাজেট অনুযায়ী ল্যাপটপ নির্বাচন করার সময় কিছু বিষয় মনে রাখা উচিত। প্রথমত, আপনার বাজেট পরিসীমা নির্ধারণ করুন। বাজেটের ওপর ভিত্তি করে আপনি কোন ধরনের স্পেসিফিকেশন ও ব্র্যান্ড চয়েস করবেন তা ঠিক হবে।
  • সাশ্রয়ী বাজেট হলে, Acer Swift 3 বা Lenovo IdeaPad মডেল ভালো বিকল্প হতে পারে। এগুলো কম দামে ভালো পারফরম্যান্স প্রদান করে।
  • মধ্যম বাজেট এর জন্য Dell Inspiron বা HP Pavilion মডেলগুলি ভালো বিকল্প। এতে শক্তিশালী স্পেসিফিকেশন ও উচ্চমানের বিল্ড কোয়ালিটি পাওয়া যায়।
  • প্রিমিয়াম বাজেট থাকলে, Apple MacBook Air বা Dell XPS 13 কেনা যেতে পারে। এসব মডেল উন্নত পারফরম্যান্স ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি লাইফ নিশ্চিত করে।
আপনার বাজেট অনুযায়ী সঠিক ল্যাপটপ নির্বাচন করতে এই দিকনির্দেশনাগুলো সহায়ক হবে।

গ্রাফিক্স ও প্রসেসরের গুরুত্ব?

গ্রাফিক্স এবং প্রসেসর ল্যাপটপের পারফরম্যান্সের দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রসেসর, বা CPU, ল্যাপটপের সামগ্রিক গতি ও দক্ষতা নির্ধারণ করে। শক্তিশালী প্রসেসর যেমন Intel Core i7 বা AMD Ryzen 7 মাল্টিটাস্কিং এবং ভারী অ্যাপ্লিকেশনের জন্য আদর্শ।
  • গ্রাফিক্স কার্ড, বা GPU, বিশেষভাবে ভিডিও সম্পাদনা, গেমিং এবং গ্রাফিক্স-ভিত্তিক কাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একটি উন্নত গ্রাফিক্স কার্ড যেমন NVIDIA GeForce বা AMD Radeon ল্যাপটপের ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা উন্নত করে।
  • যদি আপনি গেমিং বা গ্রাফিক ডিজাইন করেন, তবে শক্তিশালী GPU প্রয়োজন। অন্যদিকে, সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য একটি ইন্টিগ্রেটেড গ্রাফিক্স কার্ড যথেষ্ট হতে পারে। গ্রাফিক্স এবং প্রসেসরের এই সমন্বয় আপনার ল্যাপটপের কাজের গতি ও সক্ষমতা বাড়ায়।
  • আপনার ল্যাপটপের কাজের ধরন অনুযায়ী গ্রাফিক্স এবং প্রসেসর নির্বাচন করা উচিত যাতে পারফরম্যান্সে কোনো বাধা না আসে।

স্টোরেজ ও র‍্যাম কতটুকু প্রয়োজন?

স্টোরেজ এবং র‍্যাম ল্যাপটপের পারফরম্যান্স ও ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্টোরেজের ক্ষেত্রে, SSD (Solid State Drive) দ্রুত তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করে, যা ল্যাপটপের গতি বাড়ায়। 256GB SSD সাধারনত মৌলিক ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট, তবে আরো বেশি স্টোরেজ প্রয়োজন হলে 512GB বা 1TB SSD বেছে নেওয়া যেতে পারে।

র‍্যাম-এর পরিমাণও ল্যাপটপের সামর্থ্য নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। 8GB RAM সাধারণ ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট, তবে 16GB বা তার বেশি RAM মাল্টিটাস্কিং ও ভারী অ্যাপ্লিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয়।
স্টোরেজ ও র‍্যাম- এর সমন্বয় ল্যাপটপের কাজের গতি এবং দক্ষতা উন্নত করে। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত স্টোরেজ ও র‍্যাম নির্বাচন করুন যাতে ল্যাপটপের পারফরম্যান্স সর্বোচ্চ হয়।

ব্যাটারি লাইফ ও পোর্টেবিলিটির গুরুত্ব?

ব্যাটারি লাইফ এবং পোর্টেবিলিটি ল্যাপটপ ব্যবহারের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফ যেকোনো ভ্রমণকারী বা অন-দ্য-গো পেশাজীবীর জন্য অপরিহার্য। সাধারনত, একটি ল্যাপটপের ব্যাটারি লাইফ 6 থেকে 12 ঘণ্টার মধ্যে থাকে। উচ্চ ব্যাটারি লাইফ ল্যাপটপের ব্যবহারকে আরো সুবিধাজনক করে তোলে।
  • পোর্টেবিলিটি, যেমন ল্যাপটপের ওজন ও আকার, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পাতলা ও হালকা ল্যাপটপগুলো সহজেই বহন করা যায় এবং ভ্রমণের সময় সুবিধা দেয়।
  • যদি আপনি ঘন ঘন চলাচল করেন, তাহলে দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফ এবং হালকা ল্যাপটপ বেছে নেয়া উচিত। এটি আপনাকে কাজের মাঝে বা পথে সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদান করবে।

ল্যাপটপের অপারেটিং সিস্টেম ও সফটওয়্যার বাছাই?

ল্যাপটপের অপারেটিং সিস্টেম ও সফটওয়্যার নির্বাচন করার সময় কিছু বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন। Windows একটি বহুল ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেম, যা বিভিন্ন ধরণের সফটওয়্যার সাপোর্ট করে এবং অধিকাংশ ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম।
  • macOS একটি জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম যা Apple ল্যাপটপে ব্যবহৃত হয়। এটি বিশেষ করে গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিংয়ে ভালো পারফরম্যান্স প্রদান করে।
  • Linux অপারেটিং সিস্টেম প্রযুক্তি প্রেমীদের জন্য আদর্শ। এটি কাস্টমাইজযোগ্য এবং অনেক শক্তিশালী সফটওয়্যার উপলব্ধ।
ল্যাপটপের সফটওয়্যারও গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন যেমন অফিস সুইট, এন্টিভাইরাস এবং অন্যান্য প্রোগ্রাম সঠিকভাবে ইনস্টল করা উচিত। অপারেটিং সিস্টেম ও সফটওয়্যারের সঠিক নির্বাচন আপনার কাজের অভিজ্ঞতা উন্নত করবে।

প্রসেসর সিপিইউ?

প্রসেসর সিপিইউ?

প্রসেসর বা সিপিইউ ল্যাপটপ এর খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি হার্ডওয়্যার। একজন ক্রেতা ল্যাপটপ কেনার সময় ল্যাপটপের প্রসেসর নির্বাচনের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ বাজারে এত এত কোম্পানির প্রসেসর এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রসেসর রয়েছে, যাতে কোন ধরনের প্রসেসর ল্যাপটপের জন্য ভালো হবে, সেটা একজন কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি সহজে বুঝে উঠতে পারেন না।

সাধারণত কম্পিউটার প্রসেসর এর ক্ষেত্রে মার্কেটে দুই ধরনের কোম্পানি সবচাইতে জনপ্রিয়। একটি হচ্ছে AMD এবং অন্যটি হচ্ছে Intel কোম্পানি। Intel এর সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত কিন্তু AMD প্রসেসর সম্পর্কে আমরা খুব বেশি কিছু জানি না।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি AMD প্রসেসর কিনবেন, নাকি Intel এর প্রসেসর কিনবেন? আসলে আপনার বাজেটের উপর নির্ভর করবে যে, আপনার জন্য AMD প্রসেসর ভালো হবে নাকি Intel এর প্রসেসর ভালো হবে?

আপনার বাজেট যদি ৩০ হাজার টাকার কম হয় তাহলে আপনার জন্য AMD এর প্রসেসর সবচাইতে ভালো হবে। কারণ ৩০ হাজার টাকার কম দামে Intel প্রসেসর এর ল্যাপটপ কিনলে সেই ল্যাপটপ থেকে আপনি ভালোমানের পারফর্মেন্স পাবেন না। কারণ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে কেনা AMD প্রসেসর যুক্ত ল্যাপটপ ৩০ হাজার টাকার Intel প্রসেসর এর চাইতে অনেক ভালো পরফর্মেন্স দেবে। সুতরাং ৩০ হাজার টাকার কম মূল্যে ল্যাপটপ কেনার ক্ষেত্রে AMD প্রসেসর আপনার জন্য বেটার হবে।

পক্ষান্তরে আপনার বাজেট ৩৫ হাজার টাকার বেশি হলে আপনি অনায়াসে Intel এর প্রসেসর কিনতে পারেন। কারণ ৩৫ টাকার বেশি বাজেটের Intel প্রসেসর যুক্ত ল্যাপটপ থেকে আপনি AMD এর চাইতে অনেক ভালো পারফর্মেন্স পাবেন। কারণ Intel এর প্রসেসর তুলনামূলকভাবে অন্য সকল প্রসেসর এর চাইতে কম শক্তি অপচয় করে।

কোন ধরনের প্রসেসর কিনবেন (Core i3 নাকি Core i5)?

নতুন ও পুরাতন ল্যাপটপ কেনার সময় একজন ক্রেতাকে এখানে আরো বড় সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। কারণ বর্তমান মার্কেটে Pentium, Dual Core, Core i3, Core i5, Core i7 এবং সর্বশেষ Core i9 প্রসেসর এর ল্যাপটপ পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে কোনটি কার জন্য পারফেক্ট হবে সেটা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ক্রেতাদের হেজিটেশনে পড়তে হয়। কোনটি আপনার জন্য পারফেক্ট হবে সেটি জানার আগে Core কি, সেটা জেনে নিলে আপনার জন্য Core i3 নাকি Core i5 ভালো হবে, তা নিজে নিজে বুঝতে পারবেন।

কোর কি (Core)?

Core হচ্ছে কম্পিউটার প্রসেসর এর শক্তি। একটি প্রসেসর এ যত বেশি Core থাকে সেই প্রসেসর তত শক্তিশালী হয় এবং কম্পিউটার দ্রুত কাজ করে। তবে এখানে Core i3 মানে ৩টি Core নয় বা Core i5 মানে ৫টি Core নয়। এগুলো হচ্ছে প্রসেসর এর এক একটি ভার্সন। সাধারণত Core i3 প্রসেসরে ২টি Core থাকে এবং Core i5 প্রসেসরে ৪টি Core থাকে। Core বিষয়টি বুঝানোর জন্য আমি একটি উদাহরনের মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার করছি।

উদাহরণঃ ধরুন এক প্লেট ভাত খাওয়ার জন্য আপনাকে দেওয়া হল। আপনি এক প্লেট ভাত খেতে কমপক্ষে ২ মিনিট সময় নিলেন। পক্ষান্তরে এক প্লেট ভাত ২ জনকে খেতে দেওয়া হলে, তারা দু’জন আপনার চাইতে আরো দ্রুত খেতে পারবে। ঠিক একইভাবে প্রসেসর এর চারটি কোর দুটি কোর চাইতে যেকোন কাজ দ্রুত করতে পারে। সে জন্য বেশি কোর এর প্রসেসর সম্পন্ন ল্যাপটপ কিনলে ল্যাপটপ দ্রুত গতির হয়।

উপরের উদাহরণ ও বিশ্লেষণ থেকে অবশ্যই আপনার বুঝতে বাকি নেই যে, আপনার জন্য কোন ধরনের প্রসেসর ভালো হবে। আপনি যদি শুধুমাত্র অফিসিয়াল কাজের জন্য এমএস ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট, ইন্টারনেট ব্রাউজিং এবং গান শুনা ও ভিডিও দেখার মত হালকা পাতলা কাজ করেন, তাহলে Core i3 প্রসেসর এর ল্যাপটপ কিনতে পারেন।

পক্ষান্তরে ফটো এডিটিং, ভিডিও এডিটিং ও হালকা পাতলা গেম খেলা সহ আনুষাঙ্গিক কিছু ভারি কাজ করতে চাইলে Core i5 ল্যাপটপ কিনার জন্য আমি সাজেস্ট করব। সেই সাথে আরো ভারি ভারি কাজ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই Core i7 কিংবা Core i9 ল্যাপটপ কিনতে হবে। তবে যত বেশি কোর সমৃদ্ধ ল্যাপটপ কিনবেন, আপনার বাজেট তত বেশি হবে।

প্রসেসর এর জেনারেশন কি?

কম্পিউটার প্রসেসর এর ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় হচ্ছে জেনারেশন। প্রায় সময় আমরা 7th, 8th, 9th, 10th, 11th ও 12th জেনারেশন এর ল্যাপটপ শুনে থাকি। প্রসেসর এর জেনারেশন যত বেশি হয় প্রসেসর তত কম শক্তি অপচয় করে এবং প্রসেসর তত বেশি শক্তিশালি হয়। কারণ জেনারেশন আপডেট হওয়ার সাথে সাথে প্রসেসর এর চিপগুলো তত ছোট হতে থাকে। যার ফলে প্রসেসর কম শক্তি অপচয় ও ল্যাপটপের ব্যাটারির কম চার্জ খরছ করেও বেশি কাজ করতে পারে। বর্তমানে 10th, 11th ও 12th জেনারেশনের ল্যাপটপ বেশি জনপ্রিয়। তবে জেনারেশন যত বেশি ল্যাপটপের দাম তত বেশি হবে।

র‌্যাম (RAM)?

র‌্যাম ল্যাপটপ এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ল্যাপটপের প্রসেসর এর চাহিদার তুলনায় র‌্যাম কম হলে ল্যাপটপে ভালোমানের প্রসেসর থাকা সত্বেও ভালো গতি পাওয়া যাবে না। সেই জন্য প্রসেসর এর শক্তি বিবেচনা করে ল্যাপটপের র‌্যাম কম বেশি হয়ে থাকে।

আপনি যদি Core i3 ল্যাপটপ কিনেন তাহলে অবশ্যই ৪ জিবি র‌্যাম এর ল্যাপটপ কিনবেন। কিন্তু Core i5 প্রসেসর এর ল্যাপটপ কিনলে ৮ জিবি এবং Core i7 প্রসেসর এর ক্ষেত্রে অবশ্যই ১৬ জিবি র‌্যাম এর ল্যাপটপ কিনতে হবে। সেই সাথে 8th, 9th, 10th, 11th ও 12th জেনারেশন এর ল্যাপটপের ক্ষেত্রে অবশ্যই DDR4 র‌্যাম এর ল্যাপটপ ক্রয় করবেন। কারণ DDR4 র‌্যাম অন্যান্য র‌্যামের তুলনায় শক্তিশালি ও দ্রুত গতির হয়।

রোম (হার্ড ডিস্ক)?

কম্পিউটারের স্থায়ি ম্যামোরিকে হার্ড ডিস্ক ড্রাউভ বলা হয়। এই হার্ড ডিস্কে আমাদের সকল ফাইল সংরক্ষণ করা থাকে। সেই সাথে ল্যাপটপের হার্ড ডিস্কের C Drive এ ল্যাপটপের সকল সিস্টেম সফটওয়্যারগুলো ইনস্টল থাকে। আমরা সাধারণ ব্যবহারকারীরা ল্যাপটপের হার্ড ডিস্ককে তেমন গুরুত্ব দেই না। নরমালি আমাদের ল্যাপটপে 1TB এর হার্ড ডিস্ক পেলেই আমরা খুশি হয়ে যাই।

কিন্তু আমরা জানি না যে, ল্যাপটপের হার্ড ডিস্ক, প্রসেসর ও র‌্যাম এই তিনটি হার্ডওয়্যারের সমন্বয়ে একটি ল্যাপটপের স্পিড নির্ভর করে। এই তিনটির মধ্যে কোন একটি অংশ দূর্বল হলে আপনার ল্যাপটপ থেকে আশানুরুপ স্পিড পাবেন না। কাজেই শুধু মাত্র বড় সাইজের হার্ড ডিস্ক হলেই হবে না, সেই সাথে ভালোমানের হার্ড ডিস্ক হতে হবে।

বর্তমানে মার্কেটে দুই ধরনের হার্ড ডিস্ক পাওয়া যায়। একটি হচ্ছে Hard Disck Drive (HDD) এবং অন্যটি হচ্ছে Solide State Drive (SSD). একটি HDD এর তুলনায় SSD অনেক দ্রুত গতি সম্পন্ন হয়। নরমালি একটি HDD এর স্পিড 100MB এর একটু বেশি হয়, কিন্তু একটি SSD এর স্পিড 600MB এর কাছাকাছি হয়ে থাকে। তাছাড়া বর্তমান মার্কেটে NVME M.2 নামে আরেক ধরনের SSD রয়েছে যার স্পিড প্রায় 4GB এর অনেক বেশি।

কোন ধরনের হার্ড ডিস্ক ভালো?

হার্ড ডিস্ক নিয়ে আমি আর বেশি কিছু বিশ্লেষণ করতে চাইছি না। কারণ বেশি বিশ্লেষণ করলে আপনি কনফিউজ হয়ে যাবেন এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। সাধারণত SSD যুক্ত ল্যাপটপ এর দাম অনেক বেশি হয়ে থাকে বিধায় আমাদের দেশে 521GB SSD এর বেশি ল্যাপটপ পাওয়া যায় না।

আপনার বাজেট মাঝারি অংকের হয়ে থাকলে একটি 1TB হার্ড ডিস্ক এর পাশাপাশি একটি 128GB কিংবা 256GB SSD যুক্ত ল্যাপটপ কিনলে ল্যাপটপের স্পিড অনেক বেশি পাবেন। কারণ SSD এর মধ্যে Windows ইনস্টল করে রাখলে ল্যাপটপ অনেক দ্রুত কাজ করবে।

মাদারবোর্ড?

মাদারবোর্ড একটি প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড যা কম্পিউটারের মূল ফাউন্ডেশন হিসেবে কাজ করে। এটি কম্পিউটার চ্যাসিসের নিচে কিংবা ব্যাক সাইডে থাকে। মাদারবোর্ড কম্পিউটারের অন্যান্য ডিভাইসে পাওয়ার সাপ্লাই দেয় এবং সিপিইউ, র‍্যাম ও অন্যান্য হার্ডওয়্যারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। মাদারবোর্ডের আরো অনেক নাম রয়েছে যেমন, এমবি, বেস বোর্ড, মোবো, মেইন বোর্ড, মেইন সার্কিট বোর্ড, এম-বোর্ড, সিস্টেম বোর্ড, প্ল্যানার বোর্ড, লজিক বোর্ড ইত্যাদি। কম্পিউটারের সাইজ ও টাইপের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরণের মাদারবোর্ড রয়েছে।

ল্যাপটপ এর মাদারবোর্ড নিয়ে বেশি কিছু বলার নেই। তবে ল্যাপটপ কেনার সময় আপনার ল্যাপটপে থাকা মাদারবোর্ড সব ধরনের আপডেট ডিভাইস এর চিপ সাপোর্টেড কি না সেটা ভালোভাবে জেনে নিবেন। বিশেষকরে DDR4 RAM, M.2 SSD এবং NVME M.2 SSD সাপোর্ট করে কি না তা জেনে নিয়ে ল্যাপটপ কিনবেন। তা না হলে ভবিষ্যতে ল্যাপটপ আপগ্রেট করতে গিয়ে সমস্যা ফেইস করতে হবে।

ল্যাপটপের ডিসপ্লে?

সাধারণত 1366 x 768 সাইজের ডিসপ্লে হচ্ছে হাফ এইচডি এবং 1920 x 1080 সাইজের ডিসপ্লে ফুল এইচডি। বর্তমান সময়ে হাফ এইচডি ডিসপ্লে এর চাহিদা খুব একটা নেই। সে জন্য নতুন ল্যাপটপ কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই ফুল এইচডি ডিসপ্লে এর ল্যাপটপ কেনার চেষ্টা করবেন। তাহলে হাই রেজুলেশনের ভিডিও দেখা, গেম খেলা ও গ্রাফিক্সের কাজ করার ক্ষেত্রে অনেক স্বচ্ছ ও ঝকঝকে ছবি দেখতে পাবেন।

তবে শুধুমাত্র ফুল এইচডি ডিসপ্লে এর ল্যাপটপ কিনলেই হবে না। ফুল এইচডি ডিসপ্লে কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই সেই ল্যাপটপে গ্রাফিক্স কার্ড আছে কি না সেটাও গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। কারণ ফুল এইচডি ডিসপ্লে এর ল্যাপটপে গ্রাফিক্স কার্ড না থাকলে ডিসপ্লে ফুল এইচডি হওয়া সত্বেও ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে এবং গ্রাফিক্স এর কাজ করার সময় ফুল এইচডি এর সুবিধা পাওয়া যাবে না।

কারণ ফুল এইচডি সাপোর্ট পাওয়ার জন্য গ্রাফিক্স কার্ড এর প্রয়োজন হয়। কাজেই ফুল এইচডি ল্যাপটপ কেনার ক্ষেত্রে ল্যাপটপে মিনিমাম 2GB গ্রাফিক্স কার্ড রয়েছে এমন ল্যাপটপ কেনার চেষ্টা করবেন। তবে আপনি হাই রেজুলেশন গেম খেললে কিংবা গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করলে 4GB গ্রাফিক্স কার্ড সমৃদ্ধ ল্যাপটপ কিনলে আরো ভালো গ্রাফিক্স সাপোর্ট পাবেন।

ল্যাপটপ সাইজ এবং ওয়েইট?

আপনি কোন ধরনের কাজের জন্য ল্যাপটপ কিনছেন সেটার উপর ডিপেন্ড করে আপনাকে ল্যাপটপের সাইজ এবং ওয়েইট নির্ধারণ করতে হবে। কারণ আপনি যদি ঘরে বসে কাজ করার জন্য ল্যাপটপ কিনেন, তাহলে এক ধরনের ল্যাপটপ হবে এবং বিভিন্ন জায়গায় বাহিরে কাজ করার জন্য ল্যাপটপ কিনলে আপনার জন্য আরেক সাইজের ল্যাপটপ হবে।

সাধারণত যারা বিভিন্ন সময় ল্যাপটপ সাথে নিয়ে ঘুরতে হয় এবং বিভিন্ন মিটিংয়ে প্রেজেনটেশন করতে হয়, তাদের ক্ষেত্রে একটু ছোট সাইজের হালকা পাতলা স্লিম ল্যাপটপ কেনা ভালো। এতেকরে সহজে বহন করা সম্ভব হয় এবং যেকোন জায়গাতে অনায়াসে ব্যবহার করতে কমফরটেবল হয়।

সচরাচর ল্যাপটপে বাহির কাজ করার প্রয়োজন না হলে আপনি ১৫ ইঞ্চি ল্যাপটপ কিনতে পারেন। তবে বাহিরে কাজ করার ক্ষেত্রে ১৪ ইঞ্চি ল্যাপটপ এবং হালকা পাতলা গঠনের ল্যাপটপ কেনা ভালো। সেই সাথে আপনার বাজেট একটু বেশি হলে Note Book কিনতে পারলে বাহিরে কাজ করা এবং বহন করা আপনার জন্য আরো সহজ হবে।

অপারেটিং সিস্টেম (সফটওয়্যার)?

অপারেটিং সিস্টেম এর ক্ষেত্রে আমি বলব সবসময় Windows অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা সবচাইতে ভালো। কারণ এটি খুব অল্প দামে কিনতে পাওয়া যায়। তাছাড়া আপনি টাকা খরছ করতে না চাইলে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে ক্রাক করেও সম্পূর্ণ ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন।

তবে আমি বলব পাইরেট অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার না করে কিছু টাকা খরছ করে হলেও Windows 10 Pro ভার্সন ব্যবহার করলে ল্যাপটপ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বেশ ভালো পারফর্মেন্স দেবে। তাছাড়া বাজেট কম হলে আপনি Windows 10 Home ব্যবহার করতে পারেন।

অন্যান্য হার্ডওয়্যার?

ল্যাপটপে অনেক সময় এসডি কার্ড লাগানোর দরকার পড়ে। এজন্য ল্যাপটপের সাথে এসডি কার্ডের স্লট আছে কিনা তা দেখে নিবেন। এই সুবিধা থাকলে কার্ড রিডার ছাড়াই মোবাইলের ও ক্যামেরার এসডি কার্ড এর সকল ফাইল ল্যাপটপ থেকে একসেস করতে পারবেন।

ইউএসবি পোর্ট ল্যাপটপের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইউএসবি পোর্ট ৩ এর মাধ্যমে ইউএসবি ২ এর তুলনায় দ্রুত গতিতে ডাটা ট্রান্সফার করা যায়। সে জন্য ল্যাপটপের পোর্টগুলো ইউএসবি ৩ সাপোর্টেড কিনা তা অবশ্যই দেখে নিবেন।

তাছাড়া একটি ভালোমানের ল্যাপটপ কেনার সময় অবশ্যই দেখে নেওয়া উচিত যে ল্যাপটপের কিবোর্ডে ব্যাকলাইট আছে কি না? কারণ ব্যাকলাইট থাকলে অন্ধকারেও ল্যাপটপের বোতাম পরিষ্কারভাবে দেখা যায়।

স্টোরেজ (SSD vs HDD)?

  • SSD (Solid State Drive): অনেক দ্রুত, কিন্তু দাম একটু বেশি। ২৫৬GB বা ৫১২GB SSD সাধারণত পর্যাপ্ত হয়।
  • HDD (Hard Disk Drive): বেশি স্টোরেজ পাওয়া যায়, কিন্তু গতি তুলনামূলক ধীর। বড় ফাইল স্টোর করার জন্য HDD বেশি কার্যকরী।
  • মিশ্র স্টোরেজ: কিছু ল্যাপটপে SSD ও HDD উভয়ই থাকে, যা স্পিড এবং স্টোরেজের ভালো সমন্বয় দেয়।

ডিসপ্লে সাইজ ও রেজোলিউশন?

  • ল্যাপটপের স্ক্রিন সাইজ এবং রেজোলিউশন আপনার কাজের অভিজ্ঞতাকে প্রভাবিত করে।
  • ডিসপ্লে সাইজ: ১৩-১৫ ইঞ্চি সাধারণত ভালো পোর্টেবিলিটি এবং ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা দেয়। ১৭ ইঞ্চি ডিসপ্লে বড় এবং ভারী হতে পারে, কিন্তু বড় স্ক্রিনের সুবিধা রয়েছে।
  • রেজোলিউশন: Full HD (1920×1080) রেজোলিউশন সাধারণত ভালো হয়। উচ্চমানের ভিডিও বা গেমিংয়ের জন্য 2K বা 4K ডিসপ্লে বেছে নিতে পারেন।

লেখকের মন্তব্য?

নতুন ল্যাপটপ গাইড সম্পর্কে জানলাম। নতুন ল্যাপটপ নির্বাচন করার সময় সঠিক তথ্য ও পর্যালোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রাফিক্স, প্রসেসর, স্টোরেজ, র‍্যাম, ব্যাটারি লাইফ, পোর্টেবিলিটি, অপারেটিং সিস্টেম এবং সফটওয়্যার এই সমস্ত দিক বিবেচনায় রাখা উচিত।

আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ল্যাপটপের স্পেসিফিকেশন ঠিক করুন এবং বাজেটের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সেরা মডেল নির্বাচন করুন। বাজারের বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং মডেল তুলনা করে দেখে, গ্রাহক পর্যালোচনা পড়ুন এবং পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিন। এই ছিল নতুন ল্যাপটপ গাইড সম্পর্কে।

সঠিক ল্যাপটপ নির্বাচন করলে এটি আপনার কাজের গতি ও সঠিকতা বাড়াবে। আমি আশাবাদী যে, এই পরামর্শগুলো আপনাকে আপনার নতুন ল্যাপটপ নির্বাচনে সহায়তা করবে।

লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আর উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই Comments করে জানিয়ে দিবেন,সবাইকে ধন্যবাদ আজকের মতো এখানেই বিদায় নিলাম হাজির হবো আরও নিত্য নতুন টিপস নিয়ে আমি রবিউল ইসলাম আসসালামু আলাইকুম। আল্লাহু সর্বশক্তিমান

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url