খেজুর ও দুধ একসঙ্গে খেলে কী হয়?
ভূমিকা?
এই উষ্ণ এবং পুষ্টিকর পানীয়টি কেবল সুস্বাদুই নয় বরং সাধারণ অসুস্থতা মোকাবিলার একটি প্রাকৃতিক উপায়ও। খেজুর, দুধ এবং মসলার মিশ্রণ একটি প্রশান্তিদায়ক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী পানীয় তৈরি করে। পরিবর্তিত আবহাওয়ায় সুস্থ থাকার জন্য এক গ্লাস খেজুরের দুধ উপভোগ করুন।
আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়ে আপনাকে খাবারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সচেতন হতে হবে কারণ ভেতর থেকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির শক্তি হিসেবে পরিচিত খেজুর এই মৌসুমি অসুস্থতা মোকাবিলায়। একটি উপকারী খাবার হতে পারে এর সুস্বাদু মিষ্টি স্বাদের পাশাপাশি রয়েছে অনেক উপকারিতা।
খেজুর হজমশক্তি উন্নত করে এবং হৃদরোগ দূরে রাখে সেইসঙ্গে কাজ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও ঠান্ডা, কাশি এবং ফ্লুর জন্য, এটি একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিকার হিসেবেও কাজ করে। আসুন এই আর্টিকালের মাধ্যমে আমরা জেনে নেই খেজুর ও দুধ একসঙ্গে খেলে কি কি হয়।
খেজুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা?
পাকা এবং শুকনো খেজুর উভয়ই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এটি সংক্রমণের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এগুলি B1, B2, B3, B5 এবং A1 এর মতো প্রয়োজনীয় ভিটামিনও সরবরাহ করে।
ডিকে পাবলিশিং হাউসের হিলিং ফুডস-এ উল্লেখ করা হয়েছে, খেজুর দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসযন্ত্রের রোগের জন্য একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিকার। যা ইনফিউশন, নির্যাস, সিরাপ বা পেস্ট হিসেবে গ্রহণ করলে গলা ব্যথা, সর্দি এবং ব্রঙ্কিয়াল ক্যাটারহ থেকে মুক্তি দেয়। খেজুর ও দুধ একসঙ্গে খেলে মিলবে আরও অনেক বেশি উপকার।
- খেজুর দুধের রেসিপি তৈরি করতে যা লাগবে?
- ২ কাপ দুধ
- ১/২ কাপ খেজুর (বীজ ছাড়ানো এবং কুচি করা)
- দেড় টেবিল চামচ বাদাম
- আধা চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া
- চিনি (স্বাদ অনুযায়ী) অথবা ১ টেবিল চামচ মধু
যেভাবে তৈরি করবেন?
আধা কাপ দুধে, কুচি করা খেজুর প্রায় ৪০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন যাতে সেগুলো নরম হয় ভেজানো খেজুর এবং দুধ। একটি ব্লেন্ডারে ঢালুন মিশ্রণে বাদামও যোগ করুন ঘন না হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন মিশ্রণটি একপাশে রাখুন, এবার অবশিষ্ট দুধ একটি পৃথক প্যানে ফুটিয়ে নিন।
দুধ ফুটতে শুরু করলে প্যানে খেজুর এবং বাদামের মিশ্রণ যোগ করুন এই পর্যায়ে দারুচিনি এবং চিনি (অথবা মধু) মিশিয়ে নিন। মিশ্রণের উপকরণগুলো প্রায় ৫ মিনিট ধরে সেদ্ধ করুন, যাতে স্বাদগুলো একসাথে মিশে যায়।
এবার পরিবেশন গ্লাস বা মগে খেজুরের দুধ ঢেলে দিন সর্বাধিক আরাম এবং স্বস্তির জন্য গরম গরম পরিবেশন করুনএই উষ্ণ। এবং পুষ্টিকর পানীয়টি কেবল সুস্বাদুই নয় বরং সাধারণ অসুস্থতামোকাবিলার একটি প্রাকৃতিক উপায়ও।
খেজুর, দুধ এবং মসলার মিশ্রণ একটি প্রশান্তিদায়ক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী পানীয় তৈরি করে। পরিবর্তিত আবহাওয়ায় সুস্থ থাকার জন্য এক গ্লাস খেজুরের দুধ উপভোগ করুন।
দুধ-খেজুর একসঙ্গে খাওয়ার উপকারিতা?
দুধ ও খেজুর উপকারিতার দিক থেকে কোনোটিই কম যায় না দুধের উপকারিতার কথা সবার জানা অন্যদিকে খেজুর প্রয়োজনীয়। খনিজ ভিটামিনে পরিপূর্ণ আপনি যদি গরম দুধের সঙ্গে খেজুর মিশিয়ে খেতে পারেন,তাহলে অনেক উপকার পাবেন।
রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধে দুটি খেজুর মিশিয়ে খান এ ছাড়াও খেজুরের মধ্যে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা বিভিন্ন রোগপ্রতিরোধেও সাহায্য করে মন ভালো রাখতেও কার্যকর দুধ ও খেজুর।
চলুন জেনে নেয়া যাক খেজুর ও দুধ একসঙ্গে খেলে কী হয়
হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়: খেজুরে প্রচুর আয়রন থাকে, যা রক্তের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সহায়তা করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, দুধে খেজুর ভিজিয়ে তা কিছুক্ষণ গরম করার পর ১৮-৫৫ বছর বয়সী কয়েকজন মানুষকে প্রতিদিন। সকালে খালি পেটে খাওয়ানোর পর ১০ দিনের মধ্যে তাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বেড়েছে। দুধ ও খেজুরের এই কম্বিনেশন খেলে অ্যানিমিয়া অর্থাৎ রক্তস্বল্পতা রোগ সেরে উঠে।
অন্তঃসত্ত্বার জন্য উপকারী: এক গবেষণায় দেখা গেছে, গরুর দুধে খেজুর ভিজিয়ে নিয়মিত খেলে অন্তঃসত্ত্বাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। আর এই কম্বিনেশন গর্ভে থাকা শিশুর হাড় ও রক্ত তৈরিতে ভূমিকা রাখে। এক্ষেত্রে রাতের বেলা ৫-৬টি খেজুর রাতভর দুধের মধ্যে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে দুধের সঙ্গে খেজুরের মিশ্রণটা ভালোভাবে মিশিয়ে তার সঙ্গে একটু এলাচের গুঁড়ো ও এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে নিয়ে খেতে হবে।
দুধের সাথে খেজুর খেলে কি ওজন বাড়ে?
দুধের সাথে খেজুর: ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধে খেজুর মিশিয়ে নিন এটি ওজন বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি উপায়। খেজুর এবং শুকনো ফল: বাদাম, কাজু এবং আখরোটের সাথে খেজুর খান, এটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর উভয়ই।
বয়সের ছাপ দূর করে: খেজুর ও দুধে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে বলে এই দুই খাবার বয়স বাড়ার কারণে মুখের চামড়া কুঁচকে যে বয়সের ছাপ পড়ে। তা দূর করে এক্ষেত্রে দুধে কয়েকটি খেজুর রাতভর ভিজিয়ে রাখতে হবে।
সকালে খেজুর ও দুধের মিশ্রণের সঙ্গে মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এরপর ১৫-২০ মিনিট সেই পেস্ট মুখে মেখে রাখুন। পরে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন এই পেস্ট মুখে মাখলে উপকার পাওয়া যাবে।
দুধের সাথে খেজুর কিভাবে খাব?
দুধের সাথে খেজুর খাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত উপায় হল খেজুরগুলির গর্তগুলি সরিয়ে মসৃণভাবে চার টুকরো করে কাটা। তারপর, খেজুর, দুধ এবং চিনি যোগ করুন (ঐচ্ছিক, কারণ খেজুরে ইতিমধ্যেই চিনির পরিমাণ বেশি) এবং। সবকিছু একসাথে মিশিয়ে পিষে নিন যতক্ষণ না এটি একটি মসৃণ এবং ক্রিমি পেস্ট হয়ে যায়।
জীবনীশক্তি বাড়ায়: ১০০ গ্রাম খেজুরে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ১৫ শতাংশ শক্তি পাওয়া যায়, আর দুধে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয়। প্রায় ৯ শতাংশ শক্তি থাকে এ কারণে দুধের সঙ্গে খেজুর ভিজিয়ে খেলে শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে আপনি এই ফুড কম্বিনেশন কতটা হজম করত্ পারছেন।
প্রজননক্ষমতা বাড়ায়: দুধের সঙ্গে খেজুর ভিজিয়ে খেলে পুরুষ ও নারী দুই পক্ষেরই প্রজননক্ষমতা বাড়তে পারে। শক্তিশালী এই কম্বিনেশন সব বয়সী পুরুষ ও নারীর যৌনক্ষমতাও বাড়িয়ে দিতে পারে এক্ষেত্রে কয়েকটি। খেজুর ছাগলের দুধের সঙ্গে রাতভর ভিজিয়ে রাখতে হবে সকালে ভালো করে মিশিয়ে তার সঙ্গে, একটু এলাচ ও মধু যোগ করে খেয়ে নিতে হবে।
খেজুর আর ঘি একসাথে খেলে কি হয়?
খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে এবং ঘি-সহ এটি পাকস্থলীর হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণ করতে কাজ করে। খেজুরে রয়েছে ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস, যা হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, যেখানে ঘি অনুঘটক হিসেবে কাজ করে যা পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে।
শরীরে শক্তি বাড়ে: খেজুরে আছে প্রাকৃতিক শর্করা। দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি একসঙ্গে দুটি মিশলে পুষ্টিগুণ বেড়ে যায়। অনেক তাই নিয়মিত দুধে খেজুর ফেলে খান শরীর দুর্বল লাগা, মাথা ঘোরা থেকে মুক্তি পাবেন। যারা জটিল কোনও অসুখে ভুগছেন, তারা দুধ-খেজুর খেলে ভালো ফল পাবেন। পেট পরিষ্কার থাকবে।
প্রতিদিন কয়টি খেজুর খেলে ওজন বাড়ে?
যেহেতু ১০০ গ্রাম খেজুরে ২৮২ ক্যালোরি থাকে, তাই প্রতিদিন প্রায় ৫০০ গ্রাম খেজুর খেলে ওজন বাড়বে এবং মোট ৩০০০ ক্যালোরি পৌঁছাবে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, প্রতিদিন খুব বেশি "খেজুর" খাবেন না, কারণ এতে প্রচুর ক্যালোরি পোড়াবে যা আপনার ওজন বাড়াবে না।
চোখের সমস্যা দূর: অল্প বয়সে অনেকেই চোখে ঝাপসা দেখেন বয়স হলে চোখে ছানি পড়ে অনেকের তাই দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ রাখতে। খেজুর-দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা চোখে অঞ্জনির সমস্যায়, যারা একটানা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন, তাদেরও তা খেতে বলছেন তারা।
খেজুর খেলে কি মোটা হয়?
খেজুর খাওয়ার ৫টি সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে: ওজন বৃদ্ধি: অতিরিক্ত পরিমাণে খেজুর খেলে ক্যালরির পরিমাণ। বেশি হওয়ার কারণে ওজন বাড়তে পারে তাই, পরিমিত পরিমাণে খেজুর খাওয়া অপরিহার্য। রক্তে শর্করা: যেহেতু খেজুর প্রাকৃতিক শর্করা ধারণ করে, তাই অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে।
ত্বক ও চুলের যত্নে: দুধ-খেজুর ত্বক এবং চুলের যত্নে অনন্য ত্বকের দাগ ছোপ দূর করে এটি উপরন্তু হারিয়ে যাওয়া জেল্লা ফিরিয়ে আনে। ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে যাদের অতিরিক্ত চুল পড়ে, তারাও খেয়ে দেখতে পারেন খেজুর-দুধ উপকার পাবেন নিশ্চিত।
দুধের সাথে কি কি খেলে ওজন বাড়ে?
আপনার শক্তির পরিমাণ বৃদ্ধি করুন খাবার এবং জলখাবারে তেল, মার্জারিন, মাখন, অ্যাভোকাডো, ক্রিম, পনির, ড্রেসিং, সস, চিনি, অথবা মধু যোগ করুন। আপনার দুধ সমৃদ্ধ করুন ২ কাপ (৫০০ মিলি) দুধে ৪ টেবিল চামচ স্কিম মিল্ক পাউডার যোগ করুন। এবং ভালো করে ফেটিয়ে নিন ।এই দুধ পানীয়, সিরিয়াল এবং রান্নায় ব্যবহার করুন।
রাতে দুধের সঙ্গে খেজুর খেলে কী হয়?
দুধ ক্যালসিয়ামের উৎস হলেও অনেকে দুধ খেতে পছন্দ করেন না কিন্তু রাতে দুধ খেলে অবিশ্বাস্য উপকার পাওয়া যায়। রাতে ঘুমানোর আগে গরম দুধের সঙ্গে যদি দুইটি খেজুর মিশিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে পুষ্টিগুণ দ্বিগুণ বাড়বে।
দুধ ও খেজুর রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে দুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, আবার হজম ও ভালো ঘুমের জন্যও উপকারী, তাই ছোট বড় সবার রাতে দুধ ও খেজুর খাওয়া উচিত।
খেজুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ খেজুর খেলে বহু রোগ দূরে থাকে পাশাপাশি খেজুর যৌন ক্ষমতা বাড়ায়। বাড়ায় শুক্রাণুর সংখ্যাও তাই রাতে খেজুর খাওয়া পুরুষদের জন্য বিশেষ উপকারী। দুধের ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিড থেকে সেরোটনিনের সূত্রপাত ঘটে।
এটা মস্তিষ্কে যে সংকেত পাঠায়, তা স্নায়বিক উত্তেজনা প্রশমনে সাহায্য করে আয়রনে ভরপুর খেজুর, হার্ট, উচ্চ রক্তচাপ, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ একাধিক সমস্যা কমায়।
খেজুর আর মধু একসাথে খেলে কি হয়?
খেজুর ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ, মধু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য সরবরাহ করে, যখন দুধ ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন সরবরাহ করে। একসাথে, তারা শক্তি বাড়ায়, হজমে সহায়তা করে, হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং সামগ্রিক সুস্থতাকে সমর্থন করে।
ত্বকের বার্ধক্য প্রতিরোধ করে ত্বকে স্থিতিস্থাপকতা, আর্দ্রতা নিয়ে আসে খেজুর। খেজুরে থাকা অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য শরীরে মেলানিন সংগ্রহ করতে দেয় না। নিয়মিত খেজুর খেলে নারী-পুরুষ উভয়ের ত্বক ভেতর থেকে ভালো থাকবে।
খেজুর ও দুধ খেলে কি ওজন কমে?
ওজন কমানোর জন্য দুধের সাথে খেজুরের মিশ্রণ আপনার ফিটনেস লক্ষ্য অর্জনের একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর উপায় । প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টে ভরপুর, এই জুটি কেবল ওজন কমাতেই সাহায্য করে না, বরং সামগ্রিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি করে।
খেজুরে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা অনেক রোগ নিরাময় করে এটি খেলে ডায়াবেটিস, স্থুলতা, হৃদরোগ নিরাময় হয়। একই সাথে এটি পেটের ক্যানসার এবং আলসারের মতো অবস্থার ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে। কাজের চাপে শরীর দুর্বল লাগলে কয়েকটি খেজুর খেলে এনার্জি পাওয়া যায়।
খেজুর ও দুধ খেলে ওজন বাড়ে?
দুধের সাথে খেজুর: ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধে খেজুর মিশিয়ে নিন এটি ওজন বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি উপায়। খেজুর এবং শুকনো ফল: বাদাম, কাজু এবং আখরোটের সাথে খেজুর খান, এটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর উভয়ই।
খেজুরে থাকা পটাশিয়াম ও সোডিয়াম দেহে উচ্চ রক্তচাপ কমায়। খেজুর খারাপ কোলেস্টেরল দূর করে এবং শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। কলেস্টেরলের কারণে অনেকের হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে প্রতিদিন রাতে শোয়ার আগে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে খেজুর ভিজিয়ে রাখুন। সকালে উঠে তা পান করুন। হার্টের সমস্যা কমবে।
দুধ ও খেজুর উভয়েই রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন দুধ ও খেজুর একসঙ্গে মিশলে আয়রনের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দুধের মধ্যে দুটি খেজুর মেশানো হলে সেটি বেশ স্বাস্থ্যকর হয়, এটি মাত্র ১০ দিন খেলে রক্তস্বল্পতার সমস্যা উধাও হবে।
দুধের সাথে খেজুর খাওয়ার ৯ বিশেষ উপকারিতা?
হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়: খেজুরে প্রচুর আয়রন থাকে, যা রক্তের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সহায়তা করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, দুধে খেজুর ভিজিয়ে তা কিছুক্ষণ গরম করার পর ১৮-৫৫ বছর বয়সী কয়েকজন মানুষকে।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খাওয়ানোর পর ১০ দিনের মধ্যে তাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বেড়েছে, দুধ ও খেজুরের এই কম্বিনেশন খেলে অ্যানিমিয়া অর্থাৎ রক্তস্বল্পতা রোগ সেরে উঠে।
বয়সের ছাপ দূর করে: খেজুর ও দুধে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে বলে এই দুই খাবার বয়স বাড়ার কারণে মুখের চামড়া। কুঁচকে যে বয়সের ছাপ পড়ে, তা দূর করে এক্ষেত্রে দুধে কয়েকটি খেজুর রাতভর ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে খেজুর ও দুধের মিশ্রণের সঙ্গে মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এরপর ১৫-২০ মিনিট সেই পেস্ট মুখে মেখে রাখুন। পরে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন এই পেস্ট মুখে মাখলে উপকার পাওয়া যাবে।
ত্বক ও চুলের যত্নে: দুধ-খেজুর ত্বক এবং চুলের যত্নে অনন্য। ত্বকের দাগ ছোপ দূর করে এটি উপরন্তু হারিয়ে যাওয়া জেল্লা ফিরিয়ে আনে। ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে যাদের অতিরিক্ত চুল পড়ে, তারাও খেয়ে দেখতে পারেন খেজুর-দুধ, উপকার পাবেন নিশ্চিত।
জীবনীশক্তি বাড়ায়: ১০০ গ্রাম খেজুরে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ১৫ শতাংশ শক্তি পাওয়া যায়। আর দুধে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় প্রায় ৯ শতাংশ শক্তি থাকে। এ কারণে দুধের সঙ্গে খেজুর ভিজিয়ে খেলে শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে আপনি এই ফুড কম্বিনেশন কতটা হজম করতে পারছেন।
শরীরে শক্তি বাড়ে: খেজুরে আছে প্রাকৃতিক শর্করা দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি। একসঙ্গে দুটি মিশলে পুষ্টিগুণ বেড়ে যায় অনেক। তাই নিয়মিত দুধে খেজুর ফেলে খান শরীর দুর্বল লাগা, মাথা ঘোরা থেকে মুক্তি পাবেন। যারা জটিল কোনও অসুখে ভুগছেন, তারা দুধ-খেজুর খেলে ভালো ফল পাবেন। পেট পরিষ্কার থাকবে।
গরমকালে এমনিতেই কোনও ভারী খাবার খেলে হজমের সমস্যা হয় অল্প খেলেই পেট ভার হয়ে থাকে, গ্যাসের সমস্যা হয়। এই সমস্যা দুর করতে দুধ আর খেজুরের মিশ্রণ বেশ উপকারী খেজুরে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার থাকে, তা হজম প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করে।
ধক্যালশিয়ামের খুব ভাল উৎস দুধের সঙ্গে খেজুর মিশিয়ে খেলে হাড় মজবুত হয়। গাঁটের ব্যথার সমস্যা থাকলেও এই পানীয় খেলে সুফল মিলবে। দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতেও খেজুর দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা, চোখে আঞ্জনির হলে এই পানীয় খেলে উপকার পেতে পারেন।
যারা একটানা কম্পিউটারের সামনে কাজ করেন তাদেরও চোখের উপর বেশ চাপ পড়ে। দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে, এ ক্ষেত্রেও খেজুর দুধ খেতে পারেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে দুধ, খেজুরের মিশ্রণ আয়রন, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬। এই সমস্ত উপাদান রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতে সাহায্য করে ফলে সংক্রমণজনিত সর্দিকাশি ঠেকিয়ে রাখতে পারে এই পানীয়।
পোস্ট ট্যাগ?
অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে দুধ-খেজুরের মিশ্রণ দুধে রয়েছে ‘ট্রিপটোফ্যান’ নামক উপাদান, যা ঘুমের সঙ্গে জড়িত হরমোনের সমতা বজায় রাখে। খেজুরে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, যা স্নায়ুর উত্তেজনা বজায় রাখতে পারে, ফলে নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের পথ্য হতে পারে এই পানীয়।
লেখক এর মন্তব্য?
লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আর উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই Comments করে জানিয়ে দিবেন,সবাইকে ধন্যবাদ আজকের মতো এখানেই বিদায় নিলাম ,হাজির হবো আরও নিত্য নতুন টিপস নিয়ে আমি রবিউল ইসলাম আসসালামু আলাইকুম। আল্লাহু সর্বশক্তিমান
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url