টেনশন দূর করার ১১ সহজ উপায় ? অতিরিক্ত টেনশন করলে যা হয়?
টেনশন বা দুশ্চিন্তা মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এটি যেন মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ টেনশন ছাড়া, মানুষের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া আজকাল কঠিন ব্যাপার! বিভিন্ন গবেষণার ফলে প্রমাণিত হয়েছে, মানসিক চাপ হৃদযন্ত্রের ক্ষতি সাধন করে।
বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা গেছে যে দুশ্চিন্তা স্বল্পপুষ্টির খাবার খাওয়া বা ব্যায়াম করার অনীহার ফলে। যেসব শারীরিক সমস্যা দেখা যায় মানসিক চাপের ফলেও সৃষ্ট সমস্যাগুলো সাধারণত আরও ভয়াবহ হয়ে থাকে।
অতিরিক্ত টেনশন আমাদের জীবনের সঙ্গে প্রতিনিয়ত জড়িয়ে আছে কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা অতিরিক্ত টেনশন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কি করতে হবে। তাই আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব অতিরিক্ত টেনশন থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন তার সম্পর্কে।
টেনশন দূর করার ১১ সহজ উপায় - অতিরিক্ত টেনশন করলে যা হয়?
অতিরিক্ত টেনশন হওয়ার আগে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের কিছু পরিবর্তন আসে যে
পরিবর্তনগুলো দেখলে আপনি সহজে বুঝতে পারবেন। যে আপনি অতিরিক্ত টেনশনে ভুগতেছেন আমাদের আজকের আর্টিকেলের। বিষয়বস্তু কিভাবে অতিরিক্ত টেনশন থেকে মুক্তি পাবেন অতিরিক্ত টেনশন হলে সর্বপ্রথম যেটা হয় তা হলো প্রচন্ড মাথা ব্যথা করে।
মাথা ব্যথার পাশাপাশি শরীরে অতিরিক্ত ঘাম হয় অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রচুর পরিমাণে ঘুম আসে আবার অনেকের ক্ষেত্রে একদম ঘুম আসেনা।
খাবার খাওয়ার রুচি কমে যায়, সব সময় অন্যমনস্ক হয়ে থাকে, কারো সাথে কথা বলতে ভালো লাগে না এরকম নানা ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। যার মাধ্যমে সহজে বুঝতে পারবেন যে আপনি অতিরিক্ত টেনশনে ভুগতেছেন। কিভাবে অতিরিক্ত টেনশন থেকে মুক্তি পাবেন সে বিষয়ে এইজন্য অবশ্যই জানা দরকার।
টেনশন দূর করার খাবার?
মানবদেহের সকল কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করতে, দেহকে সুস্থ ও সবল রাখতে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবারের কোন বিকল্প হতে পারে না। অর্থাৎ শরীরকে সুস্থ, সবল, স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রধান ঔষধ হল পুষ্টিকর খাবার। তেমনি কিছু খাবার আছে যে খাবারগুলো অতিরিক্ত টেনশন দূর করতে পারে তেমনি কিছু খাবার হল পালং শাক। গাজর, টক দই, সবুজ শাকসবজি, বেরি জাতীয় ফল, বাদাম, ভিটামিন সি যুক্ত খাবার ইত্যাদি।
এই খাবারগুলো হাইপার টেনশন দূর করতে সাহায্য করে এছাড়া আরো আছে রসুন রসুনের মধ্যে শক্তিশালী আন্টি অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে আপনার মানসিক চাপও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
কিভাবে অতিরিক্ত টেনশন থেকে মুক্তি পাবেন?
অতিরিক্ত টেনশন আমাদের শরীরের জন্য খুবই মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বিভিন্ন কারণে আমরা প্রতিনিয়ত টেনশনের মধ্যে পড়ে যাই। কিন্তু কিভাবে অতিরিক্ত টেনশন থেকে মুক্তি পাবেন সেই বিষয়ে অবশ্যই জানা থাকতে হবে। অতিরিক্ত টেনশন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিজের লাইফস্টাইল বা জীবন যাপনে পরিবর্তন আনতে হবে।
- সব সময় হাসি খুশি থাকার চেষ্টা করতে হবে।
- নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে।
- একাকীত্ব পরিহার করে আপনজনদের সঙ্গে সময় কাটাতে হবে।
- বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে হবে তাহলে টেনশন হবে না।
- মেডিটেশন করতে হবে। তাহলে মস্তিষ্ক শান্ত থাকবে।
- সকল প্রকার মাদকদ্রব্য থেকে দূরে থাকতে হবে।
- বাস্তব ভিত্তিক চিন্তাভাবনায় মনোনিবেশ করতে হবে।
- অতীতের কোন কিছু ভেবে মন খারাপ করা ঠিক নয়।
- যে কাজগুলো করতে ভালো লাগে সেই কাজে সময় দিতে হবে।
- নিজ নিজ ধর্মচর্চা বেশি করে করতে হবে।
তাহলে জানতে পারলেন কিভাবে অতিরিক্ত টেনশন থেকে মুক্তি পাবেন সেই বিষয়ে এই কাজগুলো করলে সহজেই অতিরিক্ত টেনশন থেকে মুক্তি পাবেন।
অতিরিক্ত টেনশন হলে শরীরে কি কি ক্ষতি হতে পারে?
অতিরিক্ত টেনশন হলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে সবচেয়ে বেশি যে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে তা হলো হার্ট অ্যাটাক। অতিরিক্ত টেনশনের ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায় এর ফলে ব্রেন স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
আমরা উপরে আলোচনা করেছি কিভাবে অতিরিক্ত টেনশন থেকে মুক্তি পাবেন সে সম্পর্কে অতিরিক্ত টেনশন করার কারণে শরীরের স্থুলতা বেড়ে যেতে পারে, এছাড়া স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে।
অতিরিক্ত টেনশন করলে মস্তিষ্কের উপর অনেক চাপ পড়ে যায় এবং হৃদরোগের সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে আবার অতিরিক্ত টেনশন করার ফলে দেহের স্বাভাবিক ওজন হ্রাস পায় অতিরিক্ত টেনশন করার ফলে। মাথা ব্যথা হয় এবং সেই সাথে চোখ ব্যথা হয় ফলে আস্তে আস্তে চোখের ক্ষতি হয়।
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা কীভাবে দূর করবেন?
কথায় আছে, চিন্তাবিহীন কার্য নাকি ডেকে আনে বিপদ তাই সূক্ষ্ম ভাবনাচিন্তার গুরুত্ব আমরা সবাই বুঝি। কিন্তু এই চিন্তা যদি হয় বাড়াবাড়ি ধরনের অর্থাৎ প্রয়োজন ছাড়াই চিন্তা, তাহলে? এই ‘অতিরিক্ত চিন্তা’য় অনেকে মানসিক সমস্যায়ও পড়েন। ‘বেশি চিন্তা’ মন আর শরীরের মধ্যে তৈরি করে ভারসাম্যহীনতা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, অহেতুক দুশ্চিন্তা অনেকটা চক্রের মতো যত দূর করতে চাইবেন, তত আপনাকে জেঁকে ধরবে। কথায় আছে অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা’ মস্তিষ্ক যত অলস বসে থাকে তত মাথায় জমা হয় অহেতুক চিন্তা। করোনা মহামারির সময়ে বাসায় বসে থাকতে হচ্ছে কমবেশি সবাইকে। আর সে সময়েই মাথায় জমা হচ্ছে হাজারো দুশ্চিন্তা।
অহেতুক দুশ্চিন্তায় কী হয়?
অহেতুক দুশ্চিন্তার সূচনা হতে পারে যেকোনো জায়গা থেকেই আর তার প্রভাব পড়ে দৈনন্দিন জীবনে কাজের পরিমাণ কমে যায়। অহেতুক দুশ্চিন্তা সবার আগে প্রভাব ফেলে তার দৈনন্দিন কাজের ওপরে প্রথমে ফাঁকা সময়ে। দুশ্চিন্তার উদ্রেক হলেও আস্তে আস্তে ব্যস্ত সময়েও প্রভাব ফেলা শুরু করে কাজের উৎপাদনশীলতায়ও যার প্রভাব পড়ে।
ঘুম কমে যাওয়া: অহেতুক দুশ্চিন্তার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ে ঘুমে ঘুমানোর জন্য প্রয়োজন হয় একটি শান্ত মন। আর সে সময়ে যদি দুশ্চিন্তা হানা দেয় তবে কি আর ঘুম আসে? রাতের ঘুমে বড় প্রভাব ফেলে অহেতুক দুশ্চিন্তা।
অলসতা: দুশ্চিন্তা একবার শুরু হলে চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ে আর সে চিন্তা শেষ না করে কোনো কাজে মন দেওয়াও সম্ভব হয় না। ফলে হয়তো ভেবে রেখেছেন এক ঘণ্টা পর কোনো কাজে বসবেন, অহেতুক দুশ্চিন্তা সে কাজকে পিছিয়ে দেবে আরও কয়েক গুণ।
পরিত্রাণের উপায়?
কোনো সমস্যা থেকে বের হওয়ার প্রথম ধাপ হলো সমস্যা চিহ্নিত করা দুশ্চিন্তা করা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু কখন এই দুশ্চিন্তা অহেতুক এবং অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে সেটা বুঝতে শিখুন বারবার একই বিষয় নিয়ে চিন্তা করা, একই সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করা—এগুলোই অহেতুক দুশ্চিন্তার লক্ষণ।
সমস্যার সমাধান খুঁজুন: বারবার একই সমস্যার কথা না চিন্তা করে সমাধানের পথ খুঁজুন সমস্যার কথা ভেবে কখনো সমাধান আসে না। বরং যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে, ভেবে সমাধান নিয়ে ভাবলেই বরং চিন্তামুক্ত হওয়া সহজ।
নিজের জন্য সময় বরাদ্দ রাখুন: অহেতুক দুশ্চিন্তা নিজের স্বাভাবিক কাজ থেকেই দূরে সরিয়ে দেয় সবাইকে। নিজের কাজেই মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না যে কারণে সবকিছু বাদ দিয়ে পুরোনো কিছুতে ফিরে যান। ছবি আঁকা, বই পড়া; যেসব শখ বহু বছর আগে আপনার ছিল, সেটিতে মনোযোগ দিন কিংবা নতুন করে শুরু করুন। নিজের প্রিয় কাজে ব্যস্ত থাকলে আস্তে আস্তে নিজের মধ্যে হারানো আত্মবিশ্বাসও ফেরত পাবেন।
আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন: অনেক সময়ই অহেতুক দুশ্চিন্তা মানসিক চাপের সৃষ্টি করে, যা থেকে খিটখিটে মেজাজ কিংবা রেগে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। তখন সে রাগ গিয়ে পড়তে পারে নিরীহ কারও ওপর সে কারণে এ সময়ে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন। নইলে সামান্য রাগ হতে পারে আপনার অন্য কোনো সময়ের দুশ্চিন্তার কারণ।
কথা বলুন: বেশির ভাগ সময় মনে জমিয়ে রাখা কথাই সৃষ্টি করে দুশ্চিন্তা। তাই যখনই মনে হবে মনের মধ্যে দুশ্চিন্তা বাসা বাঁধছে, তখনই নিজের প্রিয় বন্ধু কিংবা কাছের মানুষ কাউকে সব খুলে বলুন। দেখবেন নিজেকে যথেষ্ট ভারমুক্ত মনে হবে।
অতীতকে অতীতের জায়গায় থাকতে দিন: যখনই মনে হবে অহেতুক চিন্তা নিজের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে দীর্ঘ একটা শ্বাস নিয়ে ভাবুন। যা হয়েছে ভালোর জন্যই হয়েছে অতীতকে চাইলেও পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, ফলে ওসব নিয়ে ভেবেও লাভ নেই। অতীতকে অতীতের জায়গায় থাকতে দিলেই বরং সবার জন্য ভালো ,এই চিন্তা নিয়ে নতুন করে কাজ শুরু করুন।
তবেই এই দুষ্টচক্র থেকে বের হওয়া যাবে মনে রাখবেন, দুশ্চিন্তা মানুষের স্বাভাবিক চিন্তাধারারই বহিঃপ্রকাশ। দুশ্চিন্তা করাও দোষের কিছু নয়, কিন্তু এই দুশ্চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়িত্ব আপনারই খেয়াল রাখবেন,দুশ্চিন্তাকে যেন আপনি নিয়ন্ত্রণে রাখেন দুশ্চিন্তা যেন আপনার জীবন নিয়ন্ত্রণ না করে।
মানসিক অস্থিরতা থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু প্রয়োজনীয় টিপস?
আপন মনের ইচ্ছার বাইরে খারাপ কোন কিছু ঘটলে বা ঘটতে থাকলেই মূলত আমরা মানসিক অস্থিরতায় ভুগি। যে কেউ মানসিক অস্থিরতায় ভুগতে পারে তাই সঠিক কৌশলে মানসিক অস্থিরতা কাটিয়ে উঠতে পারলে জীবনযাপন সহজ ও সুন্দর হয়।
প্রয়োজনীয় টিপস?
যখনই মানসিক অস্থিরতায় ভুগবেন তখন সব রকম খারাপ বা মন্দ চিন্তা করা থেকে বিরত থাকতে চেষ্টা করুন। চেষ্টা করুন ভালো কিছু চিন্তা করার এমন কিছু ভাবুন যা আপনাকে মানসিক শান্তি প্রদান করতে সাহায্য করবে, দেখবেন মানসিক অস্থিরতা এক নিমেষেই আপনার মন থেকে দূর হয়ে যাবে।
মানসিক অস্থিরতা বোধ করার সাথে সাথে আপনার জন্য প্রথম করণীয় কাজ হবে চট করে বাইরে চলে যাওয়া। একা একা যদি ঘরের এক কোণায় চুপটি করে বসে থাকেন বা নিজেকে বদ্ধ ঘরে আটকে ফেলেন তাহলে। আপনার মানসিক অস্থিরতা বাড়বে তাই মন কেমন করলে বা বুক ধরফর করলে একবার বাইরে থেকে বেড়িয়ে আসুন, আপনার মনের অস্থিরতা অনেকখানি কমে যাবে।
মেধার চর্চায় মেডিটেশন?
দুশ্চিন্তাকে মাথা থেকে দূরে রাখতে হলে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন আপনার মস্তিষ্ক এবং হাত ব্যস্ত থাকে এমন কোন কাজ করুন। যেমন গেম খেলুন বা কোন হস্তশিল্প তৈরি করুন বলা হয়ে থাকে, “অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। এটি কিন্তু বাস্তবিকই সত্য আপনি কোনো কাজ না করে অলসভাবে শুয়ে বসে থাকলে হতাশা আর দুশ্চিন্তা। আপনাকে ঘিরে ধরবে, এটাই স্বাভাবিক। তাই যেকোনো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।
ক্ষোভ ঝেড়ে ফেলুন?
মনের মধ্যে ক্ষোভ জমা করে রাখার অভ্যাস কখনোই হৃদযন্ত্রের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না
নিউরোসায়েন্স এর এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে। ক্ষমা করার পরিবর্তে ক্ষোভ জমা করে রাখলে মানসিক চাপ বেড়ে যায়, এবং সেই সঙ্গে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বাড়ে।
আপনি ভাবতেই পারবেন না মনের মধ্যে ক্ষোভ জমা থাকলে তা কত দ্রুত এবং দীর্ঘ সময় ধরে শরীরের ক্ষতি সাধন করে, তাই নিজের ঘাড় থেকে এই আপদ নামিয়ে মানসিকভাবে সুস্থ থাকুন সব সময়।
বাস্তববাদী হওয়া? যে কোনো ঘটনা বা ভবিষ্যতে কী ঘটতে পারে এ আশঙ্কায় অনেকে অযথা উৎকণ্ঠিত ও চিন্তিত হয়ে পড়েন। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, জীবন মানেই কিছু সমস্যা থাকবে এবং এমন কিছু ঘটনা ঘটতে পারে যা জীবনে কাম্য নয়।
তবে এও ঠিক, সবকিছুর সমাধান রয়েছে ও সময়ের সাথে সব ঠিক হয়ে যায় কাজেই বাস্তব পরিস্থিতি মেনে নিয়ে তার। সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার মানসিকতা গ্রহণ করতে হবে ফলে কিছুটা টেনশন কমে যাবে, তুলনামূলক ক্ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারের প্রতি অতিরিক্ত আবেগী মনোভাব দূর করতে হবে। তাই তুচ্ছ কারণে উত্তেজিত হওয়া যাবে না কারণ জীবনের মূল্য এর চেয়ে ঢের বেশি।
নির্ভুল হওয়ার চিন্তা বাদ দিন?
এ ধরনের অতিরিক্ত খুঁতখুঁতে মনোভাব শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিচরিত্রে শত্রুতার মনোভাব তৈরি করে তিনি বলেন টাইপ। এ’ চরিত্রের পেছনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে, প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের মনোভাব ব্যক্তিমনে অন্যদের প্রতি প্রবল বিদ্বেষ তৈরি করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হওয়ার মূল কারণ যা পরে হৃদরোগ ডেকে আনে, তাই সবসময় ভালো চিন্তা করুন এবং সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন।
ক্যাফেইন নেওয়া কমিয়ে দিন? ক্যাফেইন খুব দ্রুত আপনার ইন্দ্রিয়কে সজাগ করে তুলে এবং মানসিক চাপ বর্ধক হরমোনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে, এটা তখনই ভালো যদি আপনি কোনও হিংস্র বাঘের মুখে পড়েন।
তাই ঘন ঘন চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস ছাড়ুন কেননা এসবে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে এমনকি জিরো-ক্যালরি বা চিনিহীন বলে বাজারজাত করা কোমল পানীয় থেকেও নিজেকে দূরে রাখুন।
তালিকা তৈরি করুন? আপনার মনে হতে পারে আপনি শত শত সমস্যায় ভুগছেন তাই আপনার দুশ্চিন্তার কারণগুলো কারণগুলোর একটা তালিকা তৈরি করুন। দেখবেন, অল্প কয়েকটির পর আর কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না। এর মধ্যে কিছু সমস্যা থাকবে যেগুলো কমবেশি সবারই থাকে আপনি উপলব্ধি করবেন যে আপনার আসলে দুশ্চিন্তা করার খুব বেশি কারণ নেই। এটা আপনার দুশ্চিন্তা কমাতে এবং আপনাকে মানসিকভাবে শান্তি দিবে।
প্রাণ খুলে হাসলে শতকরা বিশভাগ বেশি ক্যালরি পোড়ানো যায়?
বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান? সবসময় একাকী থাকা মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি হৃদযন্ত্রেরও ক্ষতি করতে পারে এমনকি কখনও হৃদরোগ ধরা না। পড়লেও ক্ষতির আশংকা থেকেই যায় তাই একাকী ঘরে বসে না থেকে বন্ধুদের সঙ্গে বের হয়ে পড়ুন, তবে এক্ষেত্রে প্রকৃত বন্ধু নির্বাচনে সচেতন হতে হবে।
প্রাণ খুলে হাসুন? ২০০৫ সালে পরিচালিত গবেষণায় জানা যায়, সবসময় গম্ভীর থাকার বদলে প্রাণ খুলে হাসলে শতকরা বিশভাগ বেশি ক্যালরি পোড়ানো যায়। প্রাপ্তবয়স্ক কিছু মানুষকে নিয়মিত হাস্যকর এবং তুলনামূলক গম্ভীর চলচ্চিত্র দেখানোর পর, গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে আসেন।
নিয়মিত আমোদ-প্রমোদ হৃদস্পন্দনের হার বাড়িয়ে দেয়। ২০১০ সালে প্রকাশিত আমেরিকান জার্নাল অফ কার্ডিওলজি’র তথ্যানুসারে। হাসি-ঠাট্টার ফলে দেহের সংবহনতন্ত্র বা বিভিন্ন নালীর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তাই ঠোঁটের কোণে সবসময় এক চিলতে হাসি রাখুন কিংবা পারলে মন খুলে হাসুন।
ডায়েরি লিখুন? আপনি হয়তো কখনোই ডায়েরি লেখেননি যে বিষয়টি আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে, মানসিক চাপের কারণ হচ্ছে সেটি একটি ডায়রিতে লিখুন। পাশাপাশি আপনি কী চান বা কী করলে আপনার ভালো লাগত সেই বিষয়টিও লিখুন। ডায়েরি লেখার এই অভ্যাসটি মানসিক চাপ কমাতে অনেকটা সাহায্য করবে আপনাকে।
পাওয়ার ন্যাপ বা পর্যাপ্ত ঘুম? বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে না ঘুমিয়ে থাকার প্রবণতা লক্ষ করা যায় সুস্থ থাকতে হলে ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম আবশ্যক। এক্ষেত্রে সময়ের চেয়ে কতটা নিশ্চিন্তে (sound sleep) ঘুমানো গেলো তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ঘুম’ থেকে ভালো Stress Looser আর কিছু হতে পারে না তাই যখন কোনোও কিছুই আর ভালো লাগবে না বা মনে হবে। কোনো কিছুতেই মন দিতে পারছেন না, তখন একটু নিরিবিলি জায়গা দেখে পাওয়ার ন্যাপ নিয়ে, নিন দুশ্চিন্তা কেটে যাবে!
পোস্ট ট্যাগ?
এ কথা যেমন সত্যি যে, টেনশন মানুষের জীবনে স্বচ্ছন্দ গতি এবং স্বাভাবিক চলার পথে বিঘ্ন ঘটায়, তেমনি এ কথাও অস্বীকার করার অবকাশ নেই। যে জীবনে কিছু পরিমাণ টেনশন থাকা প্রয়োজন কেননা, এই টেনশন জীবনের কাজ করার পেছনে। উৎসাহ জোগায় এবং ক্ষেত্র বিশেষে, কাজ করার পেছনে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে।
শেষ কথা কিভাবে অতিরিক্ত টেনশন থেকে মুক্তি পাবেন?
প্রিয় পাঠক, আমরা আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করেছি কিভাবে অতিরিক্ত টেনশন থেকে মুক্তি পাবেন। আমরা আশা করি আপনারা বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে জানতে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন অথবা ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
আল্লাহর সর্বশক্তিমান তিনি চাইলে সবকিছু মাফ করে দিতে পারেন তাই আমরা সবাই আল্লাহর কাছে মাপ চাই তিনি অত্যন্ত দয়ালু ও ক্ষমাশীল
লেখকের মন্তব্য?
লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আর উপকৃত হয়ে থাকলে অবশ্যই Comments করে জানিয়ে দিবেন,সবাইকে ধন্যবাদ আজকের মতো এখানেই বিদায় নিলাম হাজির হবো আরও নিত্য নতুন টিপস নিয়ে আমি রবিউল ইসলাম আসসালামু আলাইকুম।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url